বুসানে বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং। ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ছবি: রয়টার্স
আগামী বছরের এপ্রিলে চীন সফরে যাবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আজ বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প নিজেই এ কথা বলেছেন।
ট্রাম্প বলেন, তাঁর ওই সফরের পর কোনো এক সময় সি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। সেটা হতে পারে ওয়াশিংটন ডিসিতে অথবা ফ্লোরিডার পাম বিচে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠককে ‘দারুণ সফল’ বলে বর্ণনা করে ট্রাম্প বলেন, সি এবং তিনি প্রায় সব বিষয়ে একমত হতে পেরেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমাদের অসাধারণ সাফল্যের জন্য তাঁরা আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’
সির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছেন, চীনা পণ্যের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ শুল্কহার ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হয়েছে।
ট্রাম্প-সির এই বৈঠকে আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যা তুলে ধরা হলো—
চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক হ্রাস
সির সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্প বলেছেন, চীনা পণ্যের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ শুল্ক হার ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হয়েছে। এই শুল্কহার তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।

বুসানে বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসার সময় এভাবে সি চিন পিংয়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে কিছু একটা বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও। ৩০ অক্টোবর, ২০২৫
ছবি: রয়টার্স
বিরল খনিজ, সয়াবিন
ট্রাম্প বলেছেন, চীনের সঙ্গে বিরল খনিজ বাণিজ্য নিয়ে সব মতবিরোধের নিষ্পত্তি হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য তিনি দেননি।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের একটি অন্যতম প্রধান কারণ এই বিরল খনিজ।
প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ এই খনিজের প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর বেইজিং একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। গত কয়েক সপ্তাহে দেশটি বিরল খনিজ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর হয়েছে।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিরল খনিজসংক্রান্ত সব বিষয়ের সমাধান হয়ে গেছে এবং এটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রে নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্য…বিশ্বব্যাপী একই পরিস্থিতি। বিরল খনিজ পেতে চীনের পক্ষ থেকে আরও কোনো বাধা থাকবে না।’
চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন কেনা বাড়াবে বলেও জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘চীন অনেক বেশি পরিমাণে সয়াবিন কেনা শুরু করতে যাচ্ছে। আমি এতে খুশি।’
এ ছাড়া সি তাঁর দেশে ফেন্টানিলের উপাদানের প্রবাহ বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়েছেন বলেও জানান ট্রাম্প।
উত্তর কোরিয়া ও তাইওয়ান প্রসঙ্গ
ট্রাম্প বলেছেন, এবারের এশিয়া সফরে তিনি খুবই ব্যস্ত ছিলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ছিল না তাঁর। কিমের সঙ্গে বৈঠক করতে তিনি আবার আসবেন বলেও জানিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এবার কোনোভাবেই কথা বলতে পারতাম না। দেখুন, আমি কতটা ব্যস্ত ছিলাম এবং সত্যি বলতে, এ জন্যই (বৈঠক) আমরা এখানে এসেছিলাম। আমার মনে হয়, আমরা যদি তা করতাম তবে এই বৈঠকের গুরুত্বের প্রতি তা হয়তো অসম্মানজনক হতো। তাই কিম জং উনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে আমি আবার আসব।’
আমরা এবার কোনোভাবেই কথা বলতে পারতাম না। কারণ দেখুন, আমি কতটা ব্যস্ত ছিলাম এবং সত্যি বলতে, এ জন্যই (বৈঠক) আমরা এখানে এসেছিলাম। আমার মনে হয়, আমরা যদি তা করতাম তবে এই বৈঠকের গুরুত্বের প্রতি তা হয়তো অসম্মানজনক হতো। তাই কিম জং উনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে আমি আবার আসব।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর এবারের এশিয়া সফর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বারবার উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছিলেন।
ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে তিনবার বৈঠক করেছেন। এ ছাড়া দুই নেতার মধ্যে বেশ কয়েকবার চিঠি বিনিময় হয়েছে।
তাইওয়ান প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, সির সঙ্গে বৈঠকে তাইওয়ানের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।

চীনের বেইজিংয়ে একটি জাদুঘরে রাখা বিরল খনিজ , ফাইল ছবি: রয়টার্স
এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘এ প্রসঙ্গ কখনো আসেনি। তাইওয়ানের কথা কখনো আসেনি।’
তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করলেও চীন দ্বীপটিকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশ মনে করে।
আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক না থাকলেও শুরু থেকে তাইওয়ানের সবচেয়ে প্রভাবশালী মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি এবং সি একসঙ্গে কাজ করবেন।







