উড়োজাহাজটি আকাশে ঘুরতে ঘুরতে মাটিতে আছড়ে পড়ছে এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। আজারবাইজান সীমান্ত, সিঘনাঘি মিউনিসিপ্যালিটি, কাখেতি, জর্জিয়া, ১১ নভেম্বর
আজারবাইজান থেকে উড্ডয়নের পর তুরস্কের একটি সামরিক কার্গো উড়োজাহাজ জর্জিয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়োজাহাজটিতে অন্তত ২০ জন তুর্কি সেনাসদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। হতাহতের সংখ্যা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার আজারবাইজান সীমান্তের কাছে জর্জিয়ার কাখেতি অঞ্চলে তুর্কি সি–১৩০ সামরিক উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়। প্রাথমিক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষ টিলাজুড়ে ঘাসের ওপর ছড়িয়ে আছে। কিছু অংশে তখনো আগুন জ্বলছিল এবং ধোঁয়া উড়ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি আকাশে ঘুরতে ঘুরতে মাটিতে আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি
এরদোয়ানের শোকবার্তা
ঘটনার সময় আঙ্কারায় ভাষণ দিচ্ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ভাষণ চলাকালে দুর্ঘটনার খবর জানতে পেরে তিনি ‘শহীদদের’ জন্য সমবেদনা জানিয়েছেন।
এরদোয়ান, তাঁর কার্যালয় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়—কেউই এখনো দুর্ঘটনার কারণ বা নিহত মানুষের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উড়োজাহাজটিতে তুর্কি ও আজারবাইজানি সেনাও থাকতে পারেন।
তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক এক্সে বলেছেন, তিনি ‘আজকের তুর্কি সশস্ত্র বাহিনীর উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত’। তিনি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘তুর্কি মিত্রদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে’।
তুরস্ক-আজারবাইজান-জর্জিয়ার ত্রিপক্ষীয় সমন্বয়
তুরস্ক ও জর্জিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কাখেতির সিঘনাঘি মিউনিসিপ্যালিটির ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য কাজ করছে। এটি প্লাবনভূমির বন ও ঢালু পাহাড়ের সীমান্তবর্তী অঞ্চল।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া বলেছেন, উদ্ধার অভিযান চলছে।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁরা ‘সেনাসদস্যদের মৃত্যুর মর্মান্তিক খবর’ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
জর্জিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে দেশটির ইন্টারপ্রেস সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ঘটনাটি মৃত্যুর কারণসহ আকাশপথে পরিবহনের সঙ্গে সম্পর্কিত অপরাধ ধারা অনুযায়ী তদন্ত করা হচ্ছে। আজারবাইজান জানিয়েছে, উড়োজাহাজটি দেশটির গাঞ্জা শহর থেকে উড্ডয়ন করেছিল।
লকহিড মার্টিনের সহায়তা প্রস্তাব
বিধ্বস্ত হওয়া উড়োজাহাজটি ছিল মার্কিন প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিনের তৈরি সি–১৩০ হারকিউলিস। এই মডেলের উড়োজাহাজ বিশ্বের বহু দেশে সেনা ও কার্গো পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের এবং তুরস্কের বিমানবাহিনী ও নাগরিকদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে লকহিড মার্টিন।
প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র ক্রিস কার্নস বলেন, ‘আমরা এ দুর্ঘটনায় শোকাহত। তদন্তে তুরস্ককে সর্বাত্মক সহায়তা করা হবে।’
সি–১৩০ হারকিউলিস হলো চার ইঞ্জিনবিশিষ্ট টার্বোপ্রপ সামরিক পরিবহন বিমান। এই উড়োজাহাজ অপরিকল্পিত রানওয়েতে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে। এটি কার্গো, সেনা ও সরঞ্জাম পরিবহন ছাড়াও গানশিপ ও গোয়েন্দা অভিযানে ব্যবহৃত হয়।







