ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা দশম গ্রেড প্রদান, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান, এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তাসহ তিন দফা দাবি আদায়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর আহ্বানে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই সম্মিলিত কর্মসূচি শুরু হবে।
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা পুনরায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছেন।
কর্মসূচির বিস্তারিত:
শুরুর তারিখ: ৮ নভেম্বর (সকাল ১০টা থেকে)
স্থান: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা
আহ্বায়ক: ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ (বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতিসহ একাধিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত)।
আন্দোলনের নেতৃত্ব: বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ সহ অন্যান্য শিক্ষক নেতা।
মূল দাবি ও ক্ষোভের কারণ:
আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো হলো:
দশম গ্রেড প্রদান: সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান বেতন স্কেল ১৩তম গ্রেড (১১,০০০ টাকা) থেকে দশম গ্রেডে উন্নীত করা।
উচ্চতর গ্রেড: চাকরির ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান নিশ্চিত করা।
পদোন্নতি: শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা দেওয়া।
শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর, নার্স এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পেলেও, সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী প্রাথমিক শিক্ষকরা দীর্ঘদিন লড়াই করেও ১১তম গ্রেডও পাননি।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি বলেন, “আমরা সম্মিলিতভাবে এই কর্মসূচি সফল করব। যারা মনে করছেন ঘরে বসে বা আন্দোলন স্থগিত করে দাবি আদায় হবে, তারা ভুলের মধ্যে আছেন।”
আন্দোলনের পটভূমি:
নেতারা আরও জানান, এর আগে গত ১৭ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি থাকলেও, কিছু শিক্ষকের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তা স্থগিত করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠালেও, অর্থ মন্ত্রণালয় তা নবগঠিত পে-কমিশনে পাঠায়। পে-কমিশন বিষয়টি তাদের এখতিয়ারভুক্ত নয় জানালে শিক্ষকরা আবার দশম গ্রেডের দাবিতে ফিরে এসে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, “আমরা এবার সম্মিলিতভাবে লাগাতার কর্মসূচিতে যাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।” এর আগে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ফলে আসন্ন পরীক্ষা এবং নিয়মিত পাঠদানে কী প্রভাব পড়ে, এখন সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।







