যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ চালু করবে সে কাজ তার জীবদ্দশায় কেউ করুক কিংবা মৃত্যুর পর করুক, এর সুফল তিনি অবিরাম পেতে থাকবেন। মন্দ কাজ চালু করলেও একই প্রতিফল পাওয়া যাবে।
জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো সুন্দর সুন্নত বা কাজ চালু করল এবং পরবর্তী সময়ে সে অনুসারে আমল করা হলো, তাহলে আমলকারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান তার জন্য লেখা হবে। এতে আমলকারীদের প্রতিদান থেকে কিছু কমিয়ে দেওয়া হবে না।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো মন্দ সুন্নত বা কাজ চালু করল এবং পরবর্তী সময়ে সে অনুসারে আমল করা হলো তাহলে আমলকারীদের গুনাহের সমান গুনাহ তার জন্য লেখা হবে। এতে আমলকারীদের গুনাহ থেকে কিছু কমিয়ে দেওয়া হবে না। (মুসলিম, হাদিস : ১০১৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি হেদায়েত তথা সঠিক পথের দিকে ডাকে তাতে তার অনুসরণকারীদের যে সওয়াব মিলবে তারও সে পরিমাণ সওয়াব মিলবে। অনুসরণকারীদের সওয়াব তাতে কিছুই কমে যাবে না।
আর যে ভুল পথের দিকে ডাকে তাতে তার অনুসরণকারীদের যে গুনাহ মিলবে তারও সে পরিমাণ গুনাহ মিলবে। অনুসরণকারীদের গুনাহ তাতে কিছুই কমে যাবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬০৯)
আলোচ্য হাদিস থেকে জানা যায়, যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজ চালু করবে, কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ সেই কাজ করবে তাদের প্রাপ্ত সওয়াবের সমান সওয়াব সে পাবে। আর যে ব্যক্তি কোনো মন্দ কাজ চালু করবে, কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ সেই কাজ করবে তাদের অর্জিত গুনাহের সমান গুনাহ সেও পাবে।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি হেদায়েত তথা সঠিক পথের দিকে ডাকে তার সে ডাকে যারা সাড়া দেবে তাদের যে প্রতিদান মিলবে তারও সে পরিমাণ প্রতিদান মিলবে। সাড়াদানকারীদের প্রতিদান তাতে কিছুই কমে যাবে না। আর যে ভুল পথের দিকে ডাকে তাতে তার অনুসরণকারীদের যে গুনাহ মিলবে তারও সে পরিমাণ গুনাহ মিলবে। এসব ভালো কিংবা মন্দ কাজ চাই সে প্রথম চালু করুক অথবা আগে থেকে চালু থাকুক, চাই তা বিদ্যা শিক্ষাদানবিষয়ক হোক কিংবা ইবাদতবিষয়ক হোক অথবা আদব বা আচরণগত হোক কিংবা অনুরূপ কিছু হোক।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উক্তি—এর অর্থ, যে লোক কোনো ভালো কাজ চালু করে সে কাজ তার জীবদ্দশায় কেউ করুক কিংবা মৃত্যুর পর করুক তার ভালো ফল ওই লোক অবিরাম পেতে থাকবে।
(নববী, শরহ মুসলিম : ১৬/২২৬)
মন্দ কাজ চালু করলেও অবস্থা একই হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ফলে কিয়ামতের দিন ওরা পূর্ণমাত্রায় বহন করবে ওদের পাপভার এবং যাদের ওরা অজ্ঞতাবশে বিভ্রান্ত করেছে তাদের পাপভার। দেখ কতই না নিকৃষ্ট ভার, যা তারা বহন করবে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ২৫)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো জীবন অন্যায়ভাবে হত্যার শিকার হলে আদমের প্রথম সন্তানের ওপর তার রক্তের একটা অংশ গিয়ে বর্তাবে। কারণ সেই প্রথম ব্যক্তি, যে হত্যাকাণ্ড চালু করেছিল। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৩৫)







