১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

/

সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত: শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক সিদ্ধান্ত

সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত: শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য উদ্বেগজনক সিদ্ধান্ত

||

দৈনিক মাটির কণ্ঠ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—যাঁরা শিশুমনের বিকাশ বোঝেন, তাঁরা এ কথার সঙ্গে একমত হবেন। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই , দেওয়া হয়।

আমাদের দেশে এখনো সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি; এই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগও করা হয়নি। ২০২০ সালে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের জন্য বিশেষ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে আলাদা শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব না হওয়ায় পরিকল্পনা করা হয়—কয়েকটি বিদ্যালয়কে একত্র করে গুচ্ছভিত্তিক (ক্লাস্টার) নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে করে নিয়োজিত শিক্ষকরা গুচ্ছভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিতভাবে ঘুরে ঘুরে অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে উৎসাহিত করতে পারবেন।

২০২০ সালের সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত হয় ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’-এর প্রজ্ঞাপন। সেখানে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছিল। এটি ছিল অত্যন্ত যুক্তিসংগত, প্রয়োজনীয় এবং সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত, যা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারত।

কিন্তু কিছু মহলের আপত্তির পর সরকার দ্রুতই সেই সিদ্ধান্তটি বাতিল করে। এটি ছিল অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত এবং অসংগত পদক্ষেপ। এমন নয় যে সারা দেশের সাধারণ মানুষ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। শিশুরা খেলাধুলায় অংশ নেবে, গান শিখবে—এমন উদ্যোগে সমাজের অধিকাংশ মানুষ আপত্তি করেন বলে মনে হয় না। কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী আপত্তি জানাতে পারেন, কিন্তু তাতে সরকার এতটা বিচলিত হয়ে আগের সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত বাতিল করবে—এটি হতাশাজনক।

আমার মতে, এটি প্রাথমিক শিক্ষার জন্য—বিশেষ করে শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে—একটি ভুল সিদ্ধান্ত। আশা করি, সরকার এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে আগের সঠিক ও সময়োপযোগী নীতিতে ফিরে আসবে।

মনজুর আহমদ
ইমেরিটাস অধ্যাপক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
সভাপতি, সরকারের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন কমিটি

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর