১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ■ ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

/

ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

||

দৈনিক মাটির কণ্ঠ

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Print

আল–জাজিরা

গত ১৫ আগস্ট রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আলাস্কা বৈঠকে মিলিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন

ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ‘স্থগিত’ রাখার প্রস্তাব দিলে বৈঠকের এ পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

কার্যত দুই পক্ষের মধ্যে শিগগির কোনো বৈঠক হচ্ছে না, এমন ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্প গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কোনো অর্থহীন বৈঠক চাই না। আমি সময় নষ্ট করতে চাই না। আমি দেখব কী হয়।’

রাশিয়া ৪২ মাস ধরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এ যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে শান্তি আলোচনার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার দুই মাস আগে গত আগস্টে ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কা বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। ওই বৈঠক থেকে কোনো ফলাফল আসেনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী এই যুদ্ধে দুই পক্ষের হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আবারও আলোচনার পরিকল্পনা কেন ভেস্তে গেল? কী করলে রাশিয়া যুদ্ধ থামাবে?

গত বছর নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে তাঁর ‘মাত্র ২৪ ঘণ্টা’ লাগবে। কিন্তু এর এক বছরের বেশি সময় পর ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার ১০ মাস পর এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়ছেন।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের সর্বশেষ প্রস্তাব কী

গত বছর নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে তাঁর ‘মাত্র ২৪ ঘণ্টা’ লাগবে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর প্রায় এক বছর হতে চললেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়ছেন।

যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্র হতে হবে এবং যুদ্ধ চলাকালে রাশিয়া যেসব ভূখণ্ড দখল করেছে, তা রাশিয়ারই থাকবে। তবে ইউক্রেন তাদের কোনো ভূখণ্ড ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ট্রাম্প দুই পক্ষকে তাদের অবস্থান থেকে সরাতে পারেননি।

গত রোববার ট্রাম্প বলেন, ভবিষ্যৎ আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই পক্ষ ভূখণ্ডসংক্রান্ত সমস্যার বিস্তারিত সমাধান করতে পারে। তবে আপাতত রাশিয়া যেন রণাঙ্গনে লড়াই স্থগিত রাখে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রণাঙ্গনে তাদের এখনই থামা উচিত, বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত, মানুষ হত্যা বন্ধ করা উচিত এবং যুদ্ধ শেষ করা উচিত।’

উক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন

বর্তমানে ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চল রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের রণাঙ্গন। এই শিল্পাঞ্চল যুদ্ধের সবচেয়ে বেশি ধকল সহ্য করছে। অঞ্চলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এ পর্যন্ত অঞ্চলটির প্রায় ৭৮ শতাংশ ভূমি রাশিয়ার হাতে চলে গেছে। আপাতত যেমন আছে, তেমনই থাকুক। পরে তারা এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারবে।’

ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা কি এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে

হ্যাঁ। মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ ইউরোপীয় নেতাদের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাঁরা অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘দৃঢ়ভাবে’ সমর্থন করছেন।

ইউরোপীয় নেতারা রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ তুলেছেন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়ার টালবাহানা বারবার প্রমাণ করেছে যে শুধু ইউক্রেনই শান্তি চায়। আমরা দেখছি, পুতিন এখনো সহিংসতা ও ধ্বংসের পথ বেছে নিচ্ছেন।’

পুতিন শান্তির জন্য প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষা খাতে চাপ বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন ইউরোপীয় নেতারা।

গত মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া ‘সপ্তাহান্তে’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি গোপন বার্তা পাঠিয়েছে। সেখানে তারা শুধু দখল করা অংশের নয়; বরং ইউক্রেনের পুরো দনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে।

রাশিয়ার অবস্থান কী

ট্রাম্প–পুতিন বৈঠকের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার আগে গত সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ স্পষ্ট করে বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ ‘স্থগিত’ করার এই প্রস্তাবে রাজি হননি। রাশিয়া এখনো আগের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে পূর্বাঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনী পুরোপুরিভাবে প্রত্যাহারসহ অন্যান্য দাবিদাওয়ার ব্যাপারে রাশিয়া এখনো অনড়।

মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া ‘সপ্তাহান্তে’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি গোপন বার্তা পাঠিয়েছে। সেখানে তারা শুধু দখল করা অংশের নয়; বরং ইউক্রেনের পুরো দনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দাবি করেছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং পরে মস্কোয় সাংবাদিকদের বলেন, আলাস্কা সম্মেলনে রাশিয়ার যে অবস্থান ছিল, এখনো সেই অবস্থানই আছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এ বার্তাটিই পৌঁছে দিয়েছেন।

আলাস্কা সম্মেলনে পুতিনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে লাভরভ বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রধান শর্ত সংঘাতের ‘মূলোৎপাটন’ করা। অর্থাৎ ইউক্রেনকে নিরস্ত্র করতে হবে এবং যুদ্ধের সময় রাশিয়া যেসব অঞ্চল দখল করেছে, সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে হবে। এরপরই রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটাতে রাজি হবে। তবে এসব দাবি ইউক্রেনের কাছে অগ্রহণযোগ্য।





সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

অক্টোবর ২৬, ২০২৫

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

সর্বশেষ

January 2025

October 2025

September 2025

নিউজটি ‍শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

আরো খবর